আঁচিল দূর করার উপায়

আজকে আমরা এডুয়েটিকের স্কিন সলুশন বিভাগে আলোচনা করবো আঁচিল দূর করার উপায় নিয়ে। তাহলে চলুন আর দেরি না আজকে আলোচ্য বিষয় সম্পর্কে আলোচনা করে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।

আঁচিল সম্পর্কে যা জানা উচিত

‘ইউএসএ আরএক্স’য়ের ডা. নাহিদ এ. আলি ‘ইটদিস ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানান, আঁচিলের সংক্রমণ ক্ষমতা আশ্চর্যজনকভাবে বেশি। তোয়ালে, গামছা, রেজার থেকে ছড়িয়ে পড়তে পারে এর জীবাণু।

ত্বকে বিভিন্ন ধরনের গোটা হিসেবে দেখা দেয় ‘আঁচিল’। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এটি বড় কোনো বিপদ বয়ে আনে না।

‘হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস (এইচপিভি)’ কোনো ক্ষতস্থানে প্রবেশ করে সংক্রমণ সৃষ্টি করলে সেখানে ‘আঁচিল’ দেখা দেয়। শিশুদের এটি হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। তবে ভাইরাস সংক্রমণের শিকার হলে বড়দেরও এটি হতে পারে।

ঘরোয়া পদ্ধতি তা সারিয়ে তোলা গেলেও সময় লাগে অনেক, তাই ধৈর্য্য রাখতে হবে। ঢিলেঢালা পোশাক পরা আর শরীর শুষ্ক রাখলে আঁচিল হওয়া আশঙ্কা কম থাকে।

আঁচিল নেই, এমন মানুষ খুব কমই পাওয়া যাবে। মূলত একধরনের ভাইরাসের আক্রমণে ত্বকে দেখা দেয় আঁচিল। এটি মানুষের শরীরের বিভিন্ন অংশে উঠতে দেখা যায়। তবে সবচেয়ে বেশি দেখা যায় ঘাড়ে। আঁচিল কিছুটা ফোস্কার মত হয়ে থাকে। মুখের ত্বকে উঠলে এটি খুবই বিব্রতকর ও সৌন্দর্য নষ্ট করে ফেলে।

আঁচিল সাধারণত দীর্ঘস্থায়ী হয়। যেসব মানুষের ওজন তুলনামূলকভাবে বেশি এবং যারা স্থুলকায় তাদের আঁচিল হওয়ার হারও অনেক বেশি। এর সাথে জিনগত একটা সম্পর্ক রয়েছে, অর্থাৎ একই পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের হওয়া সম্ভাবনা রয়েছে।

আঁচিল যেহেতু এমনিতে কোনো ক্ষতি করে না, তাই বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সৌন্দর্যগত কারণে এটা অপসারণ করা হয়। যেসব আঁচিল আকারে বড় সেগুলো অলংকার ও কাপড় পড়ার সময় ঘর্ষণের সৃষ্টি করে, এটা থেকে রক্ষা পেতে অনেকে বিভিন্ন প্রকার ওষুধ খেয়ে থাকেন। এই ওষুধের পরিবর্তে আপনি প্রাকৃতিক উপায়ে ঘরে বসেই আঁচিল দূর করতে পারেন।



তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক আঁচিল দূর করার উপায় সম্পর্কে:-

কলার খোসা

কলার খোসার মাধ্যমে আঁচিল দূর করা সম্ভব। ভেতরের অংশটি বের করে শুধু খোসা দিয়ে পেস্ট তৈরি করে নিতে হবে। এরপর সেই পেস্ট আঁচিলের উপর লাগিয়ে রাতে ঘুমিয়ে পড়ুন। পরদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। কলার খোসায় অ্যান্টি অক্সিডেন্ট আছে যা আঁচিল দূর করতে সাহায্য করে।

শুকনা মরিচের সস

ডা. আলি বলেন, “শুকনা মরিচ ওষুধ হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে বহু বছর ধরে। আর আঁচিল দূর করতে এর কার্যকারিতা প্রমাণিত।”

পানির সঙ্গে শুকনা মরিচ বাটা মিশিয়ে ‘পেস্ট’ তৈরি করতে হবে। এটি আঁচিলের ওপর দিনে ২ বেলা প্রয়োগ করতে হবে ২ সপ্তাহ ধরে। এতে আঁচিল রং বদলাবে এবং ছোট হতে থাকবে।

রসুন

রসুনের মাধ্যমেও আঁচিল সহজে দূর করা যায়। কয়েকটি রসুনের কোয়া কুচি করে পেস্ট তৈরি করে নিন। এই পেস্টটি ত্বকের আঁচিলের উপর লাগিয়ে নিন। কিছুক্ষণ রেখে কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। তবে বেশিক্ষণ রাখবেন না, ক্ষতি হতে পারে।

পেঁয়াজ

আঁচিল দূর করতে পেঁয়াজ বেশ কার্যকরী। পেঁয়াজ কুচি করে কেটে নিন। আধা চামচ লবণ মিশিয়ে সেই পেঁয়াজ কুচি সারাদিন ঢাকনা দিয়ে রেখে দিন। রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে এটি আঁচিলের উপর ব্যবহার করুন। পরদিন সকালে কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। প্রতিরাতে এটি ব্যবহার করুন দেখবেন আঁচিল দ্রুত সেরে গেছে।

ডিম

দাঁত ব্রাশে ডিমের সাদা অংশ ও কুসুম মাখিয়ে আলতোভাবে আঁচিলের ওপর ঘষতে হবে। তবে এটা দিনে ২ বার করে ২ সপ্তাহ চালিয়ে যেতে হবে।

ডিম আঁচিলের ওপর একটা সুরক্ষাকবচ তৈরি করবে। ২ সপ্তাহ সেখানে সাবান লাগানো যাবে না। ২ সপ্তাহ পর সাবান দিয়ে আঁচিলের অংশটি ভালোভাবে ধুতে হবে।

টি ট্রি অয়েল

টি ট্রি অয়েলে অ্যান্টিসেপটিক উপাদান রয়েছে, যা ত্বকের যে কোন ইনফেকশন দ্রুত দূর করতে সাহায্য করে। প্রথমে কিছু তুলো পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। এবার তুলো টি ট্রি অয়েলে ভিজিয়ে নিয়ে আঁচিলের উপর লাগান। কয়েক ঘন্টা এভাবে রেখে দিন। তারপর পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এটি দিনে ৩ বার ব্যবহার করলে বেশি উপকার পাওয়া যাবে।

অ্যালোভেরা জেল

অ্যালোভেরা ত্বকের জন্য বেশ উপকারী। আঁচিলের উপর কিছু পরিমাণ অ্যালোভেরা জেল লাগিয়ে ম্যাসেজ করুন। ত্বকে জেল শুকিয়ে না যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। এরপর ধুয়ে ফেলুন। এটি দিনে তিনবার ব্যবহার করলেই হবে।

ক্রায়োথেরাপি ফ্রিজিং

ওয়াশিংটনের ‘ইনভিগোর মেডিকাল’য়ের ডা. লিয়্যান পোস্টন বলেন, “আঁচিল দূর করার আদর্শ ডাক্তারি পদ্ধতি হল ‘ক্রায়োথেরাপি ফ্রিজিং’। এতে আঁচিলের ওপর ‘লিকুইড নাইট্রোজেন’ প্রয়োগ করে হিমায়িত করা হয়। আঁচিলের ত্বকের ভেতরের দিকে অনেক গভীর পর্যন্ত বিস্তৃত হতে পারে। এজন্য এই পদ্ধতি ঘন ঘন অনুসরণ করতে হয়। এক সময় ত্বকে ‘ব্লিস্টার’ তৈরি হবে এবং আঁচিলের মরা কোষ ঝরে পড়বে।”

বেইকিং সোডা

এক কাপ পানিতে আধা চা-চামচ বেইকিং সোডা মেশাতে হবে। তুলার বল এই মিশ্রণে ডুবিয়ে তা আঁচিলের ওপর বসিয়ে দিতে হবে। ১৫ মিনিট রাখতে হবে। তুলার বলের বদলে গজ, টিস্যু ইত্যাদিও ব্যবহার করা যায়। চলবে দিন ২ বার করে ২ সপ্তাহ।



বেকিং সোডা ও ক্যাস্টর অয়েল

আঁচিল অদৃশ্য হওয়ার জন্য বেকিং সোডা অনেক দ্রুত কাজ করে। এক চামচ বেকিং সোডাতে কয়েক ফোটা ক্যাস্টর অয়েল মিশিয়ে আঁচিলের উপর দিয়ে সারারাত রাখুন। নিয়মিত ১৫ দিন এভাবে করলে আঁচিল দূর হবে।

ডালিমের খোসা ও লেবুর রস

আঁচিল দূর করতে লেবুর রস চমৎকার কাজ করে। ডালিমের খোসা ৩ থেকে ৪ দিন রোদে শুকিয়ে নিয়ে গুড়া করে নিন। ডালিমের খোসার গুঁড়োর সাথে কয়েকফোটা লেবুর রস মিশিয়ে নিয়ে মিশ্রণটি আঁচিলে লাগান। এভাবে কয়েকদিন লাগালে উপকার পাবেন।

গরম পানি

১ টি পাত্রে পানি ফুটতে দিন। ফুটন্ত পানিতে আঁচিলের অংশটুকু ততক্ষণ ডুবিয়ে রাখুন যতক্ষণ ব্যথা না করে। সাথে সাথেই গরম পানি থেকে তুলে আঁচিলের ওপর ঠাণ্ডা কিছু প্রয়োগ করুন। দিনে তিনবার করে এই পদ্ধতি চলবে ২ সপ্তাহ।

যদি এগুলো দিয়ে চেষ্টা করার পরও আঁচিল না যায় তাহলে চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের সাথে যোগাযোগ করুন।

যুক্ত হোন আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে এখানে ক্লিক করুন এবং আমাদের সঙ্গে যুক্ত থাকুন ফেইজবুক পেইজে এখানে ক্লিক করে। বিভিন্ন শ্রেনির সকল বিষয়ে সাজেশন পেতে এখানে ক্লিক করুন। নতুন নতুন সব শিক্ষামূলক ও বিনোদনমূলক ভিডিও পেতে এখানে ক্লিক করুন এবং বেল আইকনে ক্লিক করুন।

এগুলো দেখুন

কোন নাইট ক্রিম ভালো

কোন নাইট ক্রিম ভালো

আজ আমরা এডুয়েটিকের স্কিন সলুশন বিভাগে আলোচনা করবো যে, কোন নাইট ক্রিম ভালো ? তাহলে …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *