শিশুর খাবার গ্রহণে আগ্রহ বাড়ানোর উপায়

আজকে আমরা এডুয়েটিকের শিশু স্বাস্থ্য বিভাগে আলোচনা করবো শিশুর খাবার গ্রহণে আগ্রহ বাড়ানোর উপায় নিয়ে। তাহলে চলুন আজকে আলোচ্য বিষয় নিয়ে আলোচনা শুরু করা যাক। শাক-সবজি, রুটি, মুরগি, ডিম, মাছ, মাংস ও ফলমূল এই সব কিছুই শিশুকে খাওয়ার অভ্যাস করাতে হবে। আর তাই জানা প্রয়োজন নানা ধরনের রন্ধন পদ্ধতি। একই রকমের খাবার বার বার খেতে না দিয়ে ঐ খাবারকে ভিন্নভাবে প্রস্তুত করতে হবে এবং শিশুর সামনে পরিবেশন করুন। দেখবেন, শিশু তা খাওয়ার গ্রহণ করবে এবং খাবেও।



একটি শিশু যখন প্রথম খাওয়ানো শুরু করবে, ঠিক তখন থেকেই বিচি ছাড়া পটল, আলু, ঝিঙা, গাজর, জালি, পেঁপে ইত্যাদির সবজিগুলো দিতে হবে। শিশুর যখন এক বছর বয়স হবে, তখন তাকে শাক খেতে দিন। তবে মায়েদের একটা জিনিস খেয়াল রাখতে হবে যে, এই খাবারগুলো আপনার আদরের শিশুটির হজম হয় কিনা।

শাক ঠিকমতো হজম হলে আপনার শিশুকে অন্যান্য শাক খেতে দিন। ফলের মধ্যে প্রথমে চটকানো কলা, লেবু বা মাল্টার রস, আপেল, আনারের রস খেতে দিন। ধীরে ধীরে দাঁতের সংখ্যা বৃদ্ধি ও শক্ত দাঁতের ওপর নির্ভর করে অন্যান্য ফলমূল দেওয়া যেতে পারে।

সেরিলাক (পটের দুধ) শিশুদের খিদে নষ্ট করে দেয়। এর বদলে শিশুকে সুজি, রুটি, ওটস, সাগু ইত্যাদি খাওয়ান। শিশুকে প্রথম থেকেই মাছ-শাকসবজি ইত্যাদি খাবারের সাথে পরিচয় করিয়ে দিন। তাহলে পরবর্তীতে এসব খাবার খেতে অনীহা প্রকাশ করে না।

অনেক শিশু ডিম খেতে চায় না। এক্ষেত্রে তাকে খাওয়ানো যেতে পারে ডিমের স্যুপ বা পুডিং এবং রান্না করা ডিম। এছাড়াও পুডিং, ছানা, দই, মিষ্টি, সেমাই পারেন দুধের বদলে। শিশুর বর্ধনে প্রোটিন জাতীয় খাদ্য মাছ, মাংস, দুধ, ডিম বেশি থাকা দরকার।

শিশুর খাদ্যতালিকায় শাকসবজি কম থাকলেও প্রবলেম নেই। তবে দিনে অল্প হলেও রাখতে হবে। মাঝে মাঝে শাক ভাজি বা খিচুড়ির ভিতরে দিয়ে রান্না করে খাওয়ান।

সরাসরি মাংস খেতে না চাইলে চিকেন ফ্রাই বা কাবাব করে খাওয়ান। নুডলসের সাথে ডিম, মাংস, চিংড়ি, সবজি ইত্যাদি দিয়ে আরো মজাদার করে তুলুন। সরাসরি মাছ খেতে না চাইলে তাদের মাছের বড়া করে দিন।

টেস্টিং সল্ট শিশুর জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। তাই শিশুর খাবারে টেস্টিং সল্ট দেওয়া একেবারেই নিষেধ। শিশু যেন আলগা লবণ না খায়। এতে শিশুর স্বাদ নষ্ট হয়। শিশুর ঠাণ্ডা লাগলে চা দেওয়া যাবে না। তবে গরম স্যুপ দেওয়া যেতে পারে।

শিশুর খাবার গ্রহণে আগ্রহ বাড়ানোর উপায়

খাবারে শিশুর রুচি বাড়ানোর উপায় কি?

> খাবার আধা ঘন্টা আগে জল পান করান।
> শিশুদের পছন্দমতো খাবার বেছে নেয়ার সুযোগ দিতে হবে। এতে শিশুর খাবারের চাহিদা বাড়বে।
> জিঙ্কের অভাব ক্ষুধা ক্ষতির জন্য দায়ী, তাই জিঙ্ক সমৃদ্ধ খাদ্য খাওয়ান। কাজু বাদাম, গম, কুমড়া ইত্যাদি জিংক সমৃদ্ধ।
> আপনি যদি কোনো খাবার অপছন্দ করেন তবে তা শিশুর সামনে বলবেন না।
> শিশুদের জোর করে খাওয়াবেন না।
> খেলাধুলা এবং ব্যায়াম করতে উৎসাহিত করুন।
> শিশুদের একই খাবার প্রতিদিন খাওয়াবেন না। সপ্তাহে সাতদিন শিশুর খাবারের রেসিপি তৈরি করুন।
> মাকে স্বাস্থ্যসম্মত খাবার খেতে হবে। মাকে দেখে শিশু ওই খাবার খাওয়ার অভ্যাস রপ্ত করবে।
> স্বাস্থ্যকর খাবারের প্রতি উৎসাহিত করতে শিশুদের পার্কে নিয়ে যাওয়ার কথা বলতে পারেন।
> স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার জন্য পুরস্কার দিন ও প্রশংসা করুন।
> শিশুর মধ্যে একসঙ্গে খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।
> খাবার খাওয়ানোর সময় গল্প, কবিতা ও ঘুরতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলুন।



আশা করি, আপনার শিশুর খাওয়ার সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে। বাবা-মা হিসেবে একটু কৌশলী ও ধৈর্যশীল হলেই বেশিরভাগ সমস্যা সহজে সমাধান হয়ে যায়। তাই আপনার সন্তানকে সুশিক্ষা দিন, ছোট বেলা থেকে ভালো অভ্যাস গড়ে তুলুন, উৎসাহের সাথে নিজের ইচ্ছায় খাবার গ্রহণে অভ্যাস গড়ে তুলুন। সঠিক পুষ্টি এবং সুসাস্থ্য নিশ্চিত করুন।

যুক্ত হোন আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে এখানে ক্লিক করুন এবং আমাদের সঙ্গে যুক্ত থাকুন ফেইজবুক পেইজে এখানে ক্লিক করে। বিভিন্ন শ্রেনির সকল বিষয়ে সাজেশন পেতে এখানে ক্লিক করুন। নতুন নতুন সব শিক্ষামূলক ভিডিও পেতে এখানে ক্লিক করুন।

এগুলো দেখুন

শিশুর খাবারে অরুচি

শিশুর খাবারে অরুচি

আজকে আমরা এডুয়েটিকের শিশু স্বাস্থ্য বিভাগে আলোচনা করবো শিশুর খাবারে অরুচি – কিভাবে শিশুকে খাবারের …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *