ব্রণ ও ব্রণের দাগ দূর উপায়

এডুয়েটিকের স্কিন সলুশন বিভাগে আজ আমরা ব্রণ ও ব্রণের দাগ দূর উপায় সম্পর্কে আলোচনা করবো। তাহলে চলুন আর দেরি না করে মূল আলোচনা শুরু করা যাক। ত্বকের উজ্জ্বল্য এবং সৌন্দর্য নষ্ট করে দেয় ব্রণ। এ নিয়ে অনেকেই দুশ্চিন্তায় থাকেন। যেকোনো উৎসব বা অনুষ্ঠানের আগে ত্বকে ব্রণ হলে সৌন্দর্য অনেকখানি ফিঁকে হয়ে যায়।

আমাদের ত্বকের তৈলগ্রন্থি ব্যাটেরিয়া দ্বারা আক্রান্ত হলে এর আকৃতি বৃদ্ধি পায় তখন এর ভিতরে পুঁজ জমা হতে থাকে, যা আস্তে আস্তে ব্রণের আকার ধারণ করে। সাধারণত টিনেজার ছেলে- মেয়েরাই ব্রণ ও ব্রণের দাগ নিয়ে বেশি ভোগে। ব্রণ দূর করার উপায় অবলম্বন করলে, ব্রণ থেকে বাঁচা সম্ভব।

বাজারের দামি কসমেটিক্সের পরিবর্তে কিছু ঘরোয়া পদ্ধতি অবলম্বন করলেই ব্রণ থেকে বাঁচা সম্ভব। বাজারের দামি কসমেটিক্সের ব্যবহারের কারণে অনেক সময় আপনার ত্বকে ক্ষতিও হতে পারে। কসমেটিক্সে অতিরিক্ত ক্যামিকেল দেওয়া থাকে।যা অনেক ত্বকে মানায় না। তবে ঘরোয়া পদ্ধতি অবলম্বন করলে সহজেই আপনার ব্রণ কমবে।

আর ঘরোয়া, প্রাকৃতিক ও অরগানিক সামগ্রীই সবচেয়ে ভালো আর নিরাপদ। এতে কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ারও ভয় থাকে না। ব্রণ ও ব্রণের দাগ দূর করার সহজ ও ঘরোয়া উপায়সমূহ নিন্মে বলা হলো। সঠিকভাবে এই ঘরোয়া পদ্ধতি অবলম্বন করলে ব্রণ ও ব্রণের দাগ থেকে মুক্তি পাবেন।

আরো পড়ুন: অল্প বয়সে বড় স্তনের সমস্যা
আরো পড়ুন: নবজাতকের ৫টি বিপদচিহ্ন ও করণীয়
আরো পড়ুন: পুরুষাঙ্গের ব্যায়াম

১) মুলতানি মাটি

ত্বকে অতিরিক্ত তেলতেলে ভাবের কারণ ব্রণের সমস্যা দেখা দেয়। এ সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে মুখে মুলতানি মাটি পানি দিয়ে পেস্ট করে লাগাতে পারেন। মুলতানি মাটি ত্বকের অতিরিক্ত তেল নিঃসরণ বন্ধ করে সাহায্য করে।

২) শশার রস, চালের গুঁড়া ও মধু

শশার রস মুখে ব্রণ দূর করতে খুবই কার্যকর। এ ছাড়া স্ক্রাব হিসেবে ব্যবহার করতে চাইলে এর সাথে চালের গুঁড়া মিশিয়ে নিলেই হবে। যাদের মধুতে অ্যালার্জি নেই, তারা সামান্য মধুও মিশিয়ে নিতে পারেন এই মিশ্রণে। সপ্তাহে ২ দিন এই প্যাক ব্যবহার করলে ত্বক পরিষ্কার হবে। ব্ল্যাকহেডস ও হোয়াইটহেডস দূর হয়ে যাবে। খেয়াল রাখতে হবে, ব্রণ থাকলে স্ক্রাব করা যাবে না।

৩) কাঁচা হলুদ এবং চন্দনকাঠের গুঁড়ো

কাঁচা হলুদ এবং চন্দনকাঠের গুঁড়ো ব্রণের জন্য খুবই কার্যকর দুইটি উপাদান। সমপরিমাণ বাটা কাঁচা হলুদ এবং চন্দন কাঠের গুঁড়ো একত্রে নিয়ে এতে পরিমাণ মত পানি মিশিয়ে পেষ্ট তৈরি করতে হবে। মিশ্রণটি এরপর ব্রণ আক্রান্ত জায়গায় লাগিয়ে রেখে কিছুক্ষণ পর শুকিয়ে গেলে মুখঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। এই মিশ্রণটি শুধুমাত্র ব্রণ দূর করার কাজ করে না বরং ব্রণের দাগ দূর করতেও সাহায্য করে।

৪) আপেল এবং মধুর মিশ্রণ

আপেল এবং মধুর মিশ্রণ হচ্ছে ব্রণের দাগ দূর করার সবচেয়ে জনপ্রিয় ঘরোয়া পদ্ধতি। প্রথমে আপেলের পেষ্ট তৈরি করে তাতে ৪ থেকে ৬ ফোঁটা মধু মিশাতে হবে। মিশ্রণটি মুখে লাগিয়ে কিছুক্ষন অপেক্ষা করেএরপর মুখ ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলতে হবে। এটি ত্বকের টানটান ভাব বজায় রাখে এবং গায়ের রঙ হালকা করে। সপ্তাহে ৫ থেকে ৬ বার এটি ব্যবহার করা যেতে পারে। আপনি কয়েকদিনের মধ্যে পরিবর্তনটা অনুভব করতে পারবেন।

৫) তুলসি পাতার রস

ব্রণের জন্য তুলসি পাতার রস খুব উপকারী। কারণ তুলসি পাতায় আছে আয়ূরবেদিক গুণ। শুধুমাত্র তুলসি পাতার রস ব্রণ আক্রান্ত অংশে লাগিয়ে রেখে শুকিয়ে যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। এরপর কুসুম গরম পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলতে হবে।

আরো পড়ুন: paragraph: Learning English (বাংলা অর্থসহ)
আরো পড়ুন: Composition: A journey By Train I Enjoyed (বাংলা অর্থসহ)
আরো পড়ুন: Composition: Rivers Of Bangladesh (বাংলা অর্থসহ)

৬) চন্দন কাঠের গুড়োঁ, গোলাপ জল ও লেবুর রস

চন্দন কাঠের গুড়োঁর সাথে গোলাপ জল মিশিয়ে পেষ্ট তৈরি করুন। এরপর এতে ২ থেকে ৩ ফোঁটা লেবুর রস মিশাণ। গোলাপ জল অনেকের ত্বকের সাথে এডজাষ্ট হয় না। তারা সেই ক্ষেত্রে গোলাপ জলের পরিবর্তে মধু ব্যবহার করতে পারেন। এই মিশ্রণ আপনার ব্রণের দাগ দূর করতে সাহায্য করবে। সপ্তাহে ৩ থেকে ৪ দিন ব্যবহার করতে পারলে ভালো ফল পাওয়া যাবে।

৭) দারুচিনি গুঁড়ার ও গোলাপজল

গোলাপজলের নিয়মিত ব্যবহারে ব্রণের দাগ কমে যায়। দারুচিনি গুঁড়ার সাথে গোলাপজল মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। এই পেস্ট ব্রণের ওপর লাগিয়ে ২০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। এতে ব্রণের সংক্রমণ, চুলকানি এবং ব্যথা অনেকটাই কমে যাবে।

৮) ডিমের সাদা অংশ

রাতে শোয়ার পূর্বে ডিমের সাদা অংশ ব্রণ আক্রান্ত জায়গায় ম্যাসেজ করে সারারাত রাখতে পারেন। এটি আপনার ত্বকের খসখসে ভাব দূর করে। সবচেয়ে ভালো হয় যদি এর সাথে লেবুর রস যোগ করা যায়। আপনি এটি ৩০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলতে পারেন।

৯) পেঁপে ও চালের গুঁড়ো

ব্রণ হবার একটি অন্যতম কারণ হলো অপরিষ্কার ত্বক। তাই ত্বক রাখতে হবে পরিষ্কার। নিয়মিত স্ক্রাবিং ত্বককে পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে। পাকা পেঁপে চটকে নিন এক কাপ। এর সাথে মেশা ১ টেবিল চামচ পাতিলেবুর রস এবং প্রয়োজন অনুযায়ী চালের গুঁড়ো। মিশ্রণটি মুখসহ পুরো শরীরে লাগান। ২০ থেকে ২৫ মিনিট মাসাজ করে গোসল করে ফেলুন। পেঁপে ছাড়াও ব্যবহার করতে পারেন ঘৃতকুমারীর রস।

১০) মুলতানি মাটি ও নিম পাতা

৪ থেকে ৫ টা নিম পাতা ভালো করে ধুয়ে পিষে নিন। এর মধ্যে ১ চামচ মুলতানি মাটি, অল্প গোলাপ জল মিশিয়ে প্যাক তৈরি করুন। প্যাকটা যদি গাঢ় হয়ে যায় তাহলে এর মধ্যে গোলাপ জল মিশিয়ে নিন। মুখে লাগিয়ে বেশ কিছুক্ষণ রেখে দিন। প্যাকটা মুখে শুকিয়ে গেলে হালকা পানি দিয়ে মুখটা ধুয়ে ফেলুন।

১১) পুদিনা পাতা

অতিরিক্ত গরমের কারণে ত্বকে যেসব ফুসকুড়ি এবং ব্রণ হয় সেগুলো দূর করতেও পুদিনা পাতা উপকারী। টাটকা পুদিনা পাতা বেটে ব্রণের ওপর লাগিয়ে রাখুন ২০ মিনিট এরপর ধুয়ে ফেলুন।

১২) স্পেশাল প্যাক

রক্ত চন্দন পাউডার এবং আনারের খোসার গুঁড়ো মিশিয়ে ভালো করে মিলিয়ে নিন। এই মিশ্রণের মধ্যে দুই চামচ দুধ বা টকদই দিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। মুখে লাগিয়ে কিছুক্ষণ রাখার পর ধুয়ে নিন। এই প্যাকটা নিয়মিত মুখে লাগান। ত্বকের জেল্লা বাড়বে। ব্রণের দাগও দূর হয়ে যাবে।

আরো পড়ুন: ফোনের ডাটা ফাস্ট করার উপায়
আরো পড়ুন: সবচেয়ে জনপ্রিয় ১০ টি ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার (free download)
আরো পড়ুন: ইউটিউবে কপিরাইট স্ট্রাইক দূর করার কৌশল

ব্রণ ও ব্রণের দাগ দূর উপায় ও এ থেকে মুক্তি পেতে কিছু টিপস

১) প্রতিদিন ৯ থেকে ১০ গ্লাস পানি পান করুন।

২) প্রতিদিন রাতের খাবারের পর যেকোনো ধরনের মৌসুমি ফল খান। এটি আপনার ত্বককে সতেজ রাখবে। যতটা সম্ভব তেলযুক্ত বা ফাষ্ট ফুড জাতীয় খাবার পরিহার করুন।

৩) সবসময় বাহির থেকে আসামাত্র মুখ ফেইস ওয়াশ দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এছাড়া হালকা গরম পানির স্টীম নিতে পারেন। এতে করে ত্বকে জমে থাকা ধূলোবালি পরিষ্কার হয়ে যাবে।

৪) বাড়িতে অ্যাসপিরিন থাকলে ট্যাবলেট নিয়ে গুঁড়া করে পেস্ট তৈরি করে ব্রণে লাগিয়ে রাখুন সারারাত। লালচেভাব কমে যাবে এক রাতেই।

৫) টুথপেস্টও ব্রণ সারাতে কাজ করে। ব্রণে এটি লাগালে ফোলাভাব কমে যায় কয়েক ঘণ্টাতেই। তবে জেল টুথপেস্ট ব্যবহার করবেন না।

৬) গরম পানিতে তুলা ভিজিয়ে ভাপ দিলেও ব্রণের ফোলাভাব কমে যায়। এমনকি ব্রণ থেকে ত্বকের অন্যান্য সংক্রমণের আশঙ্কাও কমে।

৭) পাশাপাশি ব্রণ বের হলে তেল, মশলা ও ভাজাপোড়া খাবার এড়িয়ে চলতে হবে।

৮) বেশি করে পানি খেতে হবে। যাতে শরীরের ভেতরের সব বিষাক্ত পদার্থ বেরিয়ে যায়।

৯) আমাদের মধ্যে অনেকেরই নখ দিয়ে ব্রণ খোটার বাজে অভ্যাস আছে।আমাদের বুঝতে হবে এটা কোন সমাধান না। উল্টো এতে ব্রণের অবস্থা আরো খারাপ হবে। এর ফলে ব্রণ লাল হয়ে যাবে। এমনকি তা ফেটে গিয়ে মুখে দাগের সৃষ্টি করবে। ব্রণ না যাওয়া পর্যন্ত মেকআপ ব্যবহার না করাই উচিত। দিনে অন্তত ২ বার তেল-মুক্ত ক্লিনজার দিয়ে মুখ ধুয়ে নিতে হবে।

যুক্ত হোন আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে এখানে ক্লিক করুন এবং আমাদের সঙ্গে যুক্ত থাকুন ফেইজবুক পেইজে এখানে ক্লিক করে। বিভিন্ন শ্রেনির সকল বিষয়ে সাজেশন পেতে এখানে ক্লিক করুন। নতুন নতুন সব শিক্ষামূলক ভিডিও পেতে এখানে ক্লিক করুন।