জীবনী: জোসেফ লিস্টার

জোসেফ লিস্টার

জীবনী: জোসেফ লিস্টার ঊনবিংশ শতাব্দীর গোড়ার দিকেও হাসপাতালর শল্যচিকিৎসকরা একবাক্যে স্বীকার করতেন যে, একটি রোগীকে শল্যচিকিৎসকের ওয়ার্ডে পাঠিয়ে দেওয়া আর তাকে যুদ্ধক্ষেত্রে পাঠিয়ে দেওয়া প্রায় সমতুল্য। তার কারণ একটি রোগীকে অপারেশন করার সময় তাকে যেভাবে অস্ত্র চালিয়ে যন্ত্রণাদায়ক অবস্থায় ফেলা হতো তা যুদ্ধক্ষেত্রে তরবারি দিয়ে আঘাত করার চেয়ে কোনো অংশে কম বেদনাদায়ক ছিলো না।

অপারেশনের সময় কোনো রকম প্রতিষেধকমূলক ব্যবস্থাও নেয়া হতো না বা নেয়ার মতো কোনো ব্যবস্থা ছিলো না, যার ফলে প্রায়ই অপারেশনের রোগী পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় আক্রান্ত হতো। ক্ষতস্থানে গ্যাংগ্রীনজাতীয় রোগ হতো। ফলে রোগী মারা পড়তো। সেকালে ধরে নেয়া হতো, অপারেশন মানেই প্রায় মৃত্যু।

এর ফলে অবস্থা এমন দাঁড়ালো যে, সার্জিক্যাল চিকিৎসার অগ্রগতির ক্ষেত্রে এই সমস্যা একটি মস্তবড় অন্তরায় হয়ে দেখা দিলো। চিকিৎসাশাস্ত্রের এই সঙ্কটময় অবস্থায় যে মহান ব্যক্তি তার নিজের মেধা-সাহস নিয়ে এগিয়ে এসেছিলেন এবং এ সমস্যার সমাধান করেছিলেন, তিনিই হলেন বিখ্যাত ব্রিটিশ শল্যচিকিৎসক যোসেফ লিস্টার।

তিনি শল্যচিকিৎসার ক্ষেত্রে নতুন পদ্ধতি আবিষ্কার করে এক নতুন যুগের সূচনা করলেন। চিকিৎসাশাস্ত্রের অগ্রগতিতে ঘটালেন বিপ্লব। ইংল্যান্ডের ইউনিভার্সিটি কলেজ হাসপাতালে যখন তিনি শল্যচিকিৎসার উপর পড়াশোনা করতেন, তখনই এ ধরনের ভয়ঙ্কর ও বীভৎস শল্যচিকিৎসার দৃশ্য তিনি নিজের চোখেই দেখেছিলেন।

১৮৫০ থেকে ১৮৬০ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে যতো রোগীকে অস্ত্রোপাচার করানো হতো তাদের শতকরা ৮০-৯০ জনই মারা যেতো। ডাক্তারি পাস করার পর ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দ থেকে জোসেফ লিস্টার প্রথম কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ করেন। চিকিৎসা করতে করতেই তিনি রোগীদের ক্ষত বিষয়ে অবহিত হতে থাকেন। প্রচলিত চিকিৎসায় এসব রোগীর বহু সংখ্যক মারা যেতো, তাই তিনি ভাবতে লাগলেন, এদের বাঁচানো যায় কি না।

এ ভাবনা তাকে সর্বক্ষণ তাড়িয়ে বেড়াতে লাগলো। তখন তিনি গ্লাসগোর একটি হাসপাতালে অস্ত্রচিকিৎসক।
তিনি দেখলেন, আগেকার ডাক্তারেরা যে জামা পরে অস্ত্রোপচার করতেন, সেই জামায় রোগীর রক্ত ও পুঁজ লেগে থাকতো। এই জামা তারা পরিষ্কার করতেন না। কত রোগীর পরিচর্যা করেছেন তার ছাপ নিয়ে এ জামা ডাক্তারদের অতীত র্কীতি ঘোষণা করতো।

এই জামা পরতে ডাক্তারগণ গৌরব অনুভব করতেন। কোনো নতুন রোগীর দেহে অস্ত্রচালনা করার সময় এ জামার স্পর্শ লেগেও সেই রোগীর ক্ষতস্থানে সেপটিক, রিসিপ্লাস ও গ্যাংগ্রীন সংক্রমিত হতো। গ্যাংগ্রীন বা রিসিপ্লাসের সংক্রামতা যখন একের পর এক আসতে থাকতো, হাসপাতালের কর্তৃপক্ষ তখন নির্বিকারভাবে এ দৃশ্য দেখতেন।

কোনো কোনো ডাক্তার পরামর্শ দিতেন, হাসপাতালের দেয়ালগুলো ভেঙে ফেলা হোক। কারণ দেয়ালগুলোতেও রোগের জীবাণু লেগে দাঁড়িয়ে থাকতো। কিন্তু হাসপাতালের কর্তৃপক্ষ একথার জবাব দিতেন না। কারণ তা হলে তো হাসপাতালের গোটা বাড়িটাই ভেঙ্গে ফেলতে হয়। তা কি সম্ভব! অবশেষে এই সমস্যার সমাধান করলেন লিস্টার।

তিনি পরীক্ষা করে দেখলেন, মাইক্রোরাস নামে একপ্রকার জীবাণু যেকোনো প্রকার সংস্পর্শযুক্ত হয়ে রোগীর ক্ষতস্থনে সেপটিকের সৃষ্টি করে। এ ধরনের জীবাণুর কথা বিজ্ঞানী লুই পাস্তুর আগেই আবিষ্কার করেছিলেন। কিন্তু হাসপাতালের রোগীদের ক্ষতস্থানেও যে এই জীবাণু থাকে, তার সন্ধান দিলেন লিস্টার। এরপর তিনি চিন্তা করতে লাগলেন কেমন করে এই জীবাণু ধ্বংস করা যায়।

কারণ এই জীবাণু ধ্বংস করা গেলেই রোগীকে রক্ষা করা যাবে। তিনি প্রতিষেধক প্রণালীর কথা ভাবতে লাগলেন। অনেক পরীক্ষানিরীক্ষার পর তিনি স্থির করলেন, কারবলিক অ্যাসিড এই জীবাণুকে ধ্বংস করতে পারে। কিন্তু সেখানেও দেখা দিলো সমস্যা। তিনি দেখলেন, কারবলিক অ্যাসিড ছিটিয়ে দিলে রোগজীবাণু ধ্বংস হয় বটে, কিন্তু রোগীর ক্ষতস্থানের আরো ক্ষতি হয়।

এরপর তিনি পঞ্চাশ ভাগ জলের সাথে এক ভাগ মাত্র কারবলিক অ্যাসিড মিশিয়ে রোগীর ক্ষতস্থানে পিচকারি দিয়ে ছিটিয়ে দিলেন। তাতে অবশ্য ভালো ফল পাওয়া গেলো। এরপর কারবলিক অ্যাসিডের সাথে তেল এবং কারবোনেট অব লাইম মিশিয়ে একপ্রকারের মলম তৈরি করলেন। এতে আরো ভালো ফল পাওয়া গেলো।

তিনি তার এই আবিষ্কার বিষয়ে নিঃসন্দেহ হয়ে ব্রিটিশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের সামনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করলেন। প্রথম অবশ্য তার এই আবিষ্কারের বিষয়ে কেউ সহজে গ্রহণ করেননি। কেউ কেউ হেসেই উড়িয়ে দিলেন ব্যাপারটি। কিন্তু পরে কেউ কেউ এই পদ্ধতি ব্যবহার করে যখন ভালো ফল পেতে লাগলো।

জোসেফ লিস্টারের জন্ম হয়েছিলো লন্ডনের কাছাকাছি অ্যাসেক্স নামক স্থানে আপটন শহরে ১৮৭২ খ্রিস্টব্দে।
পিতা জোসেফ জ্যাকসন লিস্টার ছিলেন সমাজের একজন গণ্যমান্য ব্যক্তি। তিনি মদের ও চশমার কাচের ব্যবসা করতেন। তিনি লন্ডনের রয়্যাল সোসাইটির ফেলোও ছিলেন। বিয়ে করেছিলেন লন্ডনের বিশিষ্ট খ্রিস্টান সম্প্রদায় কোয়েকার-এর জনৈক প্রভাবশালী সদস্যের কন্যা মিস হারিসকে।

জ্যাকসন লিস্টারের চশমার ব্যবসা ছিলো সখের কাজ। এ ছাড়া তার বড় ব্যবসা ছিলো মদ তৈরির কারখানা। জোসেফ লিস্টারের জন্মের বছর দুয়েক আগেই তারা সিদ্ধান্ত নেন যে, যেহেতু তাদের ব্যবসা আরো বড় হয়েছে, পরিবারের সদস্যসংখ্যাও বাড়ছে দিন দিন, তাই আর এই ছোট্টো বাড়িতে থাকা সম্ভব নয়।



তাই তারা কুইন অ্যানে নামে একটি বিশাল বাড়ি ক্রয় করে সেখানে বাস করতে থাকেন। অ্যাসেক্সের আপটন জায়গাটি নির্জন হলেও খুব মনোরম পরিবেশে ছিলো। তাদের পারিবারিক পরিবেশেই কাটে জোসেফ লিস্টারের বাল্যজীবন। লিস্টার পরিবারে নামিদামি লোক থাকলেও কোনো ডাক্তার ছিলো না। বাবার ইচ্ছে ছিলো তার ছেলেদের মধ্যে একজন ডাক্তার হোক।

বড় ছেলেকে তিনি চেষ্টাও করেছিলেন ডাক্তারি পড়ানোর জন্য। কিন্তু তার মেধা ভালো ছিলো না। যোসেফ লিস্টারের মাথা খুব ভালো ছিলো। তাই তার উপরেই ভরসা করতে লাগলেন বাবা। তার শিক্ষাজীবন শুরু হয়েছিলো টোটেমহামের গ্রোভ স্কুলে। কিন্তু উচ্চশিক্ষা নিতে গিয়েই দেখা দিলো সমস্যা। তারা ছিলেন খ্রিস্টানদের কোয়েকার সম্প্রদায়ভুক্ত।

কোয়েকারদের অন্যান্য খ্রিস্টানরা ভালো চোখে দেখতেন না। তাই কোয়েকার সম্প্রদায়ভুক্তরা পড়াশোনার জন্য অক্সফোর্ড বা কেম্বিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে পারতো না। এ কারণে যোসেফ লিস্টারের পক্ষে উপরোক্ত দু’জায়গার কোনোটিতেই ভর্তি হওয়া সম্ভব হলো না। অতঃপর তিনি লন্ডনের ইউনিভার্সিটি কলেজে ভর্তি হলেন। কারণ এখানে ধর্ম নিয়ে কোনো বিধিনিষেধ বা বাড়াবাড়ি ছিলো না।

লিস্টারের পিতার ইচ্ছে ছিলো তার ছেলে অবশ্যই ডাক্তারি পড়বে। তবে ডাক্তারি শেখার আগে সাধারণ শিক্ষায়ও উচ্চ ডিগ্রী নিতে হবে, যাতে সে সর্ববিদ্যায় পারদর্শী এবং সত্যিকারে অর্থ্য গুণী ব্যক্তি হয়ে গড়ে উঠতে পারে। তাই পিতার উপদেশমতোই তিনি আগে এই কলেজ থেকে ব্যাচেলার অব আর্টস ডিগ্রী লাভ করলেন। কিন্তু এর মধ্যে দেখা দিলো আরেক বিপদ।

তিনি সহসা বসন্ত রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়লেন, যার জন্য তার পড়াশোনাতেও সাময়িকভাবে ছেদ পড়লো। তিনি স্বাস্থ্য পরিবর্তনের জন্য ব্রিটেন থেকে চলে এলেন আয়ারল্যান্ডে। তারপর শরীর সম্পূর্ণ সুস্থ হওয়ার পর তিনি ডাক্তারি পড়ার জন্য আবার এসে ভর্তি হলেন ইউনিভার্সিটি কলেজে। তিনি চিকিৎসাশাস্ত্রের ব্যাচেলার ডিগ্রী লাভ করেন ১৮৫২ খ্রিস্টাব্দে।

যদিও তখনি তার চিকিৎসাশাস্ত্রে অসাধারণ কিছু অবদান বা কৃতিত্ব ছিলো না, তবু তিনি এফ. আর. সি. এস. এর পদ লাভ করলেন। লিস্টারের মেডিসিনের চেয়ে শল্যচিকিৎসার প্রতি ছিলো বেশি আগ্রহ। এ ব্যাপারে তাকে সবচেয়ে বেশি উৎসাহ প্রদান করেছেন তৎকালীন বিখ্যাত শল্যচিকিৎসক ইরিসেন। এ সময় তার আরেকজন শুভাকাঙ্ক্ষী বন্ধু ছিলেন ইউনিভার্সিটি কলেজের অর্ধ ব্যাপক মি. শারপে।

শারপের পরামর্শেই লিস্টার ইউরোপের বিখ্যাত শল্যচিকিৎসাকেন্দ্র এডিনবার্গ মেডিক্যাল স্কুলে যোগদান করেন। এই এডিনবার্গে এসেই তার ভাগ্য সুপ্রসন্ন হয়। রয়্যাল ইনফারমারি এবং এডিনবার্গ কলেজের সার্জারি বিভাগের প্রধান কয়েক মাসের মধ্যে কলেরায় আক্রান্ত হয়ে মারা যান। তিনি তখন সেই শূন্য পদে পদোন্নতি পেয়ে যান।

সুযোগ পেয়ে তিনি খুব দ্রুত পদোন্নতি লাভ করেন। সার্জারি বিভাগের প্রধান নিযুক্ত হবার পরই তিনি একান্তভাবে নিমগ্ন হয়ে যান গবেষণায়। তার গবেষণার মূল লক্ষ্য ছিলো শল্যচিকিৎসার বর্তমান অবস্থার উন্নয়ন সাধন করা। এ সময়েই ১৮৫৬ খ্রিস্টাব্দে তিনি এগনেস সাইমেস নামে জনৈক বিদুষী মহিলাকে বিয়ে করেন। এগনেস কিন্তু কোয়েকার সম্প্রদায়ের মেয়ে ছিলেন না।

এটাই প্রমাণ করে যে লিস্টার নিজস্ব ধর্মীয় পরিমণ্ডল থেকে বাইরে বেরিয়ে আসতে চাইছিলেন। তিনি ছিলেন সংস্কারমুক্ত মানুষ। বিয়ের পরেই তিনি বের হলেন হানিমুনে। স্ত্রী এগনেসকে নিয়ে ঘুরে বেড়ালেন ইউরোপের কয়েকটি দেশ ফ্রান্স, জার্মানি, অস্ট্রিয়া এবং ইটালি। তবে শুধু দেশ দেখে মজা করে ঘুরে বেড়ানো নয়। তিনি ঘুরে বেড়ালেন ঐসব দেশের বড় বড় হাসপাতাল আর ক্লিনিকগুলোতে।

দেখলেন সে দেশের শল্যচিকিৎসার উন্নয়নপদ্ধতি। ঘুরে বেড়াতে বেড়াতেই অর্জন করলেন বিস্তর অভিজ্ঞতা। অতঃপর তিনি গ্লাসগো ইউনিভার্সিটির অধ্যাপকের পদ গ্রহণ করলেন। তিনি এখানে এসেছিলেন ১৮৬০ খ্রিস্টাব্দে। এখানে এসেই তিনি গবেষণায় আরো বেশি করে নিমগ্ন হয়ে যান এবং সাফল্যও অর্জন করেন।

এখানেই দীর্ঘদিন একটানা গবেষণা চালিয়ে আবিষ্কার করেন অস্ত্রোপচারের পরবর্তী সময়কালের খারাপ প্রতিক্রিয়ার প্রতিষেধক ওষুধ। আবিষ্কার নিয়ে তাকে প্রথম দিকে কিছু সমালোচনার মুখোমুখি হতে হলেও শীঘ্রই চিকিৎসকরা এর গুরুত্ব অনুধাবন করতে সক্ষম হন। তার নাম ছড়িয়ে পড়ে সারা ইউরোপে। তিনি তার গবেষণাপত্রটি প্রকাশ করেন ‘দি ল্যানসেট’ নামক পত্রিকায় ১৮৬৭ খ্রিস্টাব্দে।

ইংল্যান্ডের রানী তাকে বেরোনেট উপাধিতে ভূষিত করেন। এ ছাড়া বিদেশ থেকেও তার জন্য আসতে থাকে অনেক সম্মান। কিন্তু ১৮৯৩ খ্রিস্টাব্দে তার জীবনে নেমে আসে দুর্যোগ। তার স্ত্রী এগনেস মারা যান। তিনি স্ত্রীকে অত্যন্ত ভালোবাসতেন। তাই তার মৃত্যুতে তিনি নিজেও প্রচণ্ডভাবে ভেঙে পড়েন।

এমনকি স্ত্রীর মৃত্যুর পর থেকে তার গবেষণা পর্যন্ত বন্ধ হয়ে যায়। যদিও নিয়মমাফিক হাসপাতালের ধরাবাঁধা কাজ তিনি চালিয়ে যেতেন, কিন্তু গবেষণার আগ্রহ তার একেবারেই কমে যায়। তবু অতীত অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তাকে দেওয়া হয় অর্ডার অব মেরিট। এমনিভাবেই নিঃসঙ্গ জীবন কাটিয়ে তিনি ৮৫ বছর বয়সে ১৯১২ খ্রিস্টাব্দের ২০ ফেব্রুয়ারি তারিখে পরলোকগমন করেন।



যুক্ত হোন আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে এখানে ক্লিক করুন এবং আমাদের সঙ্গে যুক্ত থাকুন ফেইজবুক পেইজে এখানে ক্লিক করে। বিভিন্ন শ্রেনির সকল বিষয়ে সাজেশন পেতে এখানে ক্লিক করুন। নতুন নতুন সব শিক্ষামূলক ভিডিও পেতে এখানে ক্লিক করুন।

বি: দ্র: তোমার নিজের রচিত কবিতা, সাহিত্য বা যেকোনো শিক্ষামূলক লেখা পাঠিয়ে দাও এডুয়েটিক’র কাছে। এডুয়েটিক প্রকাশ করবে তোমার প্রিয় লেখাটি।

Leave a Comment