আমরা অনেকেই রোজার নিয়ত কিভাবে করতে তা সঠিকভাবে জানি না। আবার অনেকে রয়েছেন যারা নিয়ত কিভাবে করতে হয় সেটিও জানেন না। অন্যদিকে লজ্জায় কেউকে জিগ্যেসও করতে পারেন না। তাই এডুয়েটিকের ধর্মকথা বিভাগে আজকে আমরা এ সম্পর্কে আলোচনা করে বিস্তারিত জেনে নিবো। এবং মাহে রমজানে সব কয়টি রোজা রাখার চেষ্টা করবো ইনশাল্লাহ।
- আরো পড়ুন: ইফতারের দোয়া
- আরো পড়ুন: তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ম
- আরো পড়ুন: তারাবির নামাজের নিয়ম
তাহলে চলুন আর দেরি না করে রোজার নিয়ত কিভাবে করবেন সে সম্পর্কে আলোচনা শুরু করা যাক:
রমজানের রোজা রাখা যেমন ফরজ তেমনি রোজার জন্য নিয়ত করাও ফরজ। নিয়ত ছাড়া দিনভর না খেয়ে উপবাস ও স্ত্রী সহবাস না করলেও রোজা হবে না। রোজা রাখার জন্য সাহরির পর অন্তরের দৃঢ় সংকল্প করাই নিয়ত।
বহু প্রচলিত রোজার নিয়ত-
– نَوَيْتُ اَنْ اُصُوْمَ غَدًا مِّنْ شَهْرِ رَمْضَانَ الْمُبَارَكِ فَرْضَا لَكَ يَا اللهُ فَتَقَبَّل مِنِّى اِنَّكَ اَنْتَ السَّمِيْعُ الْعَلِيْم
উচ্চারণ : ‘নাওয়াইতু আন আছুমা গাদাম মিন শাহরি রমাজানাল মুবারাকি ফারদাল্লাকা, ইয়া আল্লাহু ফাতাকাব্বাল মিন্নি ইন্নিকা আংতাস সামিউল আলিম।’
অর্থ : হে আল্লাহ! আমি আগামীকাল তোমার পক্ষ থেকে পবিত্র রমজানের নির্ধারিত ফরজ রোজা রাখার ইচ্ছা পোষণ (নিয়ত) করলাম। অতএব তুমি আমার পক্ষ থেকে (আমার রোজা তথা পানাহার থেকে বিরত থাকাকে) কবুল কর, নিশ্চয়ই তুমি সর্বশ্রোতা ও সর্বজ্ঞানী।
সাহরির পর এভাবেও রোজার নিয়ত করা যেতে পারে-
– بِصَوْمِ غَدٍا نَوَيْتُ مِنْ شَهْرِ رَمَضَان
উচ্চারণ: বিসাওমি গাদিন নাওয়াইতু মিন শাহরি রামাদান।
অর্থ: আমি রমজান মাসের আগামীকালের রোজা রাখার নিয়ত করছি।
নিয়ত সম্পর্কিত কিছু জরুরি কথা-
আরবি কিংবা বাংলায় মুখে নিয়তের উচ্চারণ বলা জরুরি নয়। এ সম্পর্কে আল্লামা শামি রাহমাতুল্লাহি আলাইহি ফাতাওয়ায়ে শামিতে উল্লেখ করেছেন-
‘আভিধানিক সূত্রে নিয়ত হলো ‘আজম’। আর ‘মনের দৃঢ় সংকল্পকে’ আজম বলা হয়।
রোজা রাখার জন্য নিয়ত ফরজ- এ বিষয়টি অনেকে জানেই না। তাই অনেকে রোজার নিয়ত মুখে বলা বা মনের সংকল্প কোনোটিই করেন না। আবার মুখে রোজা প্রচলিত নিয়ত তথা আরবি ও বাংলা শব্দগুলো উচ্চারণ করে অন্তরে রোজা রাখার দৃঢ় সংকল্প না থাকলে তা নিয়ত হবে না। তাই রোজা রাখার বিষয়টি অন্তরের দৃঢ় সংকল্পে থাকতে হবে।
সুতরাং মূল কথা হলো- রোজার নিয়ত করা ফরজ। নিয়ত করতে হবে। মুখে উচ্চারণ করার পরও অন্তরে একনিষ্ঠ সংকল্প রাখতে হবে। তবেই রোজা আদায় হবে।
রোজার নিয়ত করার সময়
ফরজ রোজার নিয়ত সাহরির পর রাত বাকি থাকতেই করা উত্তম। হজরত হাফসা রাদিয়াল্লাহু আনহা বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি ফজরের আগে রোজা রাখার নিয়ত করবে না তার রোজা (পূর্ণাঙ্গ) হবে না।’ (আবু দাউদ)
- আরো পড়ুন: কনডম ব্যবহারের সঠিক নিয়ম
- আরো পড়ুন: দুশ্চিন্তা দূর করার উপায়
- আরো পড়ুন: যে ৮ কারণে চুল পড়ে
অনেক ইসলামিক স্কলারদের মতে, ‘দিনের দ্বিপ্রহরের আগে রোজার নিয়ত করা না হয়ে থাকলে সেই রোজা বিশুদ্ধ হবে না। এর পরও রোজাহীন অবস্থায় দিনের বাকি সময়ে পানাহার করা রমজানুল মোবারকের সম্মানের বিরোধী বলে তা জায়েজ নয়।’ (ইমদাদুল ফাতাওয়া)
সুতরাং রমজানের ফরজ রোজা, নির্দিষ্ট মানতের রোজা এবং নফল রোজাসমূহের নিয়ত রাতের বেলা অথবা শরিয়তের ঘোষিত দ্বিপ্রহরের আগ পর্যন্ত করা গেলেও সব ধরনের রোজার জন্য রাতেই নিয়ত করে নেয়া জরুরি। (ফাতাওয়া দারুল উলুম)
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে সাহরির পর রোজা রাখার জন্য অন্তরের দৃঢ় সংকল্প তথা নিয়ত করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
যুক্ত হোন আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে এখানে ক্লিক করুন এবং আমাদের সঙ্গে যুক্ত থাকুন ফেইজবুক পেইজে এখানে ক্লিক করে।